বিসিএস তথ্যকণিকা
বিসিএস = বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস কমিশন । বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগের জন্য উপযুক্ত এবং যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি নির্বাচন করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান । সরকারি চাকুরিতে সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করতে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলা ক্যাডাররাই বিসিএস ক্যাডার নামে পরিচিত । বিসিএস ক্যাডার মূলত দুই প্রকার । ১ ) জেনারেল ক্যাডর ( এডমিন , পররাষ্ট্র , পুলিশ ইত্যাদি ) ২ ) টেকনিক্যাল ক্যাডার ( এই ক্যাডারে চাকুরী করতে হলে প্রার্থীকে নির্দিষ্ট বিষয়ে যোগ্যতা থাকতে হয় । যেমন : সরকারী ডাক্তার হতে হলে এমবিবিএস সার্টিফিকেট লাগবে ) ।
বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতাঃ
১ ) বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে ।
২ ) নির্দিষ্ট বয়স সীমার মধ্যে থাকতে হবে । এক্ষেত্রে সাধারণ প্রার্থীদের জন্য ৩০ বৎসর এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রার্থীদের জন্য ৩২ বৎসর পর্যন্ত শিথিলযোগ্য ।
৩ ) যেকোন বিষয়ে ৪ বছর মেয়াদী অর্নাস ডিগ্রী থাকতে হবে অথবা ৩ বছরের ডিগ্রী ও এক বছরের মার্স্টাসসহ প্রার্থীরা ও যোগ্য হবেন ।
৪ ) বিদেশে পড়াশুনা করা ছাত্র-ছাত্রীরাও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তাদের ডিগ্রি বাংলাদেশের চার বছরের ডিগ্রির সমান , এই সার্টিফিকেট দেখিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন ।
বিসিএস পরীক্ষাপদ্ধতি / পরীক্ষার নিয়ম
বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে মোট ৩ টি পর্যায়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আসতে হবে । এই ধাপগুলো হলো প্রিলিমিনারি , লিখিত এবং ভাইভা । নিম্নে এই পরীক্ষাগুলোর নিয়ম বা পদ্ধতি সর্ম্পকে আলোচনা করা হলোঃ
বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষাপদ্ধতি / পরীক্ষার নিয়ম
প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় মোট ২০০ নম্বরের পরীক্ষা হয় । এই পরীক্ষার জন্য পিএসসি কতৃক দেওয়া সিলেবাসের উপর ভিত্তি করে ( বাংলা , ইংরেজি , বাংলাদেশ বিষয়াবলি , আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী , ভূগোল , পরিবেশ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা , গাণিতিক যুক্তি , সাধারণ বিজ্ঞান , কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি , মানসিক দক্ষতা , নৈতিকতা , মূল্যবোধ ও সুশাসন ) এই বিষয়গুলো থেকে মোট ২০০টি প্রশ্নের উপর MCQ পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়ে থাকে । এই পরীক্ষায় প্রত্যেকটি বিষয়ে অালাদা আলাদাভাবে পাশ করতে হয় না । পিএসসি কতৃক যে কাট মার্ক ধরা হয় তার মধ্যে আপনার স্কোর থাকলেই আপনি লিখিত পরীক্ষার জন্য উত্তীণ বলে গণ্য হবেন । তবে এক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বন করতে হয় যে প্রতি দুইটি ভুল উত্তরের জন্য প্রাপ্ত নম্বর থেকে ১ নম্বর করে কর্তন করা হয় । তাই অজানা গুলোর বৃত্ত ভরাট না করাই উত্তম ।
বিসিএস লিখিত পরীক্ষাপদ্ধতি / পরীক্ষার নিয়ম
পিএসসি কতৃক গৃতীত প্রিলিমিনারি পরীক্ষার রেজাল্ট পাবলিশ করার পর শুধুমাত্র উত্তীণ প্রার্থীরাই লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন । প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরপরই লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ । নিজেকে আরো একবার সেরা প্রমাণ কার সুযোগটাই হলো এই পরীক্ষা । এই পরীক্ষায় যে যত ভালো করবে প্রত্যাশিত চাকরি পাওয়ার দৌঁড়ে সে ততোটাই এগিয়ে থাকবে । বিসিএস লিখিত পরীক্ষা মোট নয়শত নম্বরের অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে সাধারণ ও টেকনিক্যাল উভয় ক্যাডারদের জন্য । এছাড়া ও টেকনিক্যাল ক্যাডারে পরীক্ষার্থীদেরকে তাদের পঠিত বিষষের উপর দুইশত নম্বরের পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে হয় । এক্ষেত্রে টেকনিক্যাল ক্যাডারদেরকে বাংলা ২য় এবং সাধারণ বিজ্ঞানে পরীক্ষা দিতে হয় না । লিখিত পরীক্ষার মোট পাশ নাম্বার হলো ৫০ % অর্থাৎ নয়শত নম্বরের মধ্যে চারশত পঞ্ছাশ নম্বর পেলেই পাশ করা যায় ।
বিসিএস ভাইভা পরীক্ষাপদ্ধতি / পরীক্ষার নিয়ম
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরাই পাবে চুড়ান্ত পরীক্ষা অর্থাৎ ভাইবা পরীক্ষার সুযোগ । বিসিএস ভাইভা পরীক্ষায় মোট দুইশত নম্বরের মৌখিক প্রশ্ন করা হয় । এই দুইশত নম্বরের মধ্যে একশত নম্বর হলো পাশ নাম্বার । ভাইভা পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের সাথে লিখিত পরীক্ষার নাম্বার যোগ হয়ে মোট উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর লিস্টে প্রথমদিকে থাকতে পারলেই ক্যাডার পাওয়া সম্ভব । আর সামনের সারিতে থাকতে না পারলে নন ক্যাডার হয়ে চাকুরি করার সুযোগ থাকে। চুড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীরা গ্রেজেট প্রকাশের মাধ্যমে ক্যাডার পদে নিয়োগ পেয়ে থাকেন ।